মঙ্গলবার, ১৮ জুন, ২০১৩

লাকসাম কলেজে শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করেছে ছাত্রলীগ

  • আমাদের লাকসাম :একাদশ শ্রেণীতে অবৈধ ভর্তি বানিজ্যের সুযোগ না পেয়ে সোমবার ছাত্রলীগ কর্মীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে লাকসামের নওয়াব ফয়েজুন্নেসা সরকারি কলেজের প্রশাসনিক ভবনের প্রধান ফটক ও ভর্তি নিয়ন্ত্রন কক্ষে তালা লাগিয়ে দিয়ে অধ্যক্ষসহ অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারিদের অবরুদ্ধ করেছে।


কলেজ সূত্রে জানা যায়, ওইদিন সকাল ১০টায় একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়। ভর্তিইচ্ছু শিক্ষার্থীরা যথারীতি কাগজপত্র জমা দিয়ে ভর্তি ফরম সংগ্রহের জন্য ভর্তি নিয়ন্ত্রন কক্ষে যায়। এ সময় হঠাৎ কতিপয় ছাত্রলীগ কর্মী এসে হট্রোগোল শুরু করে ভর্তিইচ্ছু শিক্ষার্থীদের বের করে দেয়। তারা ভর্তি কমিটিসহ অন্যান্য কর্মচারিদের ভর্তি কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করে।

একপর্যায়ে ছাত্রলীগ কর্মীরা কলেজের প্রশাসনিক ভবনের প্রধান ফটকে ও  ভর্তি নিয়ন্ত্রন কক্ষে তালা লাগিয়ে দিয়ে অধ্যক্ষসহ অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারিদের অবরুদ্ধ করে রাখে। এতে ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ থাকে। কলেজের অধ্যক্ষ ঘটনাটি স্থানীয় সাংসদ এবং লাকসাম থানা পুলিশকে জানায়। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে প্রায় সোয়া এক ঘন্টা পর ১১.২০ মিনিটের সময় ছাত্রলীগ কর্মীরা তালা খুলে দিলে ভর্তি কার্যক্রম পুনঃরায় শুরু হয়।

ভর্তি কমিটির আহবায়ক সহযোগী অধ্যাপক মো. কামরুজ্জামান কুমিল্লার বার্তা ডটকমকে জানান, শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী চলতি শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণীতে জিপিএ’র ভিত্তিতে মেধা ক্রমানূসারে বিজ্ঞান বিভাগে ১৫০, মানবিক বিভাগে ৩০০ এবং ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ৪৫০জন মোট ৯০০ শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে।

নিয়মানুযায়ী শিক্ষার্থীরা অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করে। সে মোতাবেক কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড থেকে  মেধা ও অপেক্ষমান শিক্ষার্থীদের একটি তালিকা কলেজে পাঠানো হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ ওই তালিকা নোটিশ বোর্ডে সাঁটিয়ে দিলে কে বা করা এটি ছিঁড়ে নিয়ে যায়। এতে বিপাকে পড়েন ভর্তিইচ্ছু শিক্ষার্থীরা।

কলেজের অধ্যক্ষ ধীরেশ রঞ্জন ভৌমিক জানান, ছাত্রলীগ নামধারী শিহাব, রাজু ও কাজল নামে তিন যুবক এসে অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে একাদশ শ্রেণীতে শিক্ষার্থী ভর্তির ব্যাপারে তাঁদের কোটা প্রদানের দাবি করে। ছাত্রলীগ নামধারীদের অনৈতিক  আবেদনে সাড়া না দেওয়ায় তাঁদের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫জন বহিরাগত যুবক প্রশাসনিক ভবনের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে শিক্ষক-কর্মচারিদের অবরুদ্ধ করে রাখে। তিনি বিষয়টি স্থানীয় সাংসদকে অবহিত করেছেন বলেও জানান।

কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শিহাব খান এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কলেজের কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থী এই ঘটনা ঘটিয়েছে। এতে ছাত্রলীগের কোন সম্পৃক্ততা নেই।

লাকসাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল খায়ের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ভর্তি কার্যক্রম চলাকালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রতিদিন কলেজে পুলিশ মোতায়েন থাকবে।

এই ব্যাপারে সাংসদ মো. তাজুল ইসলাম কুমিল্লার বার্তা ডটকমকে বলেন, সরকারের নিয়মানুযায়ী ভর্তি কার্যক্রম চলবে। এতে কেউ হস্তক্ষেপ করলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন