মঙ্গলবার, ১৮ জুন, ২০১৩

বলিউডের নির্যাতিত তারকারা

বিনোদন ডেস্ক: রূপালী পর্দার তারকারা আমাদের ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তারা বাস করেন অন্য গ্রহে এমনটাই ধারনা আমাদের। তবে তাদের জীবনেও আছে হাসি কান্না। তারাও আমাদের মত খান ,প্রেম করেন, বিয়ে ও সংসার করেন। আবার কখনও কখনও পার্টনার বা স্বামীর কাছে নির্যাতিত হন। তেমনই  কয়েকজন তারকাদের নির্যাতনের খবর দিয়েছে টাইমস অব ইন্ডয়া।
ফোর্স জোন ডট ব্লগস্পট ডট কম এর পাঠকদের জন্য সেটাই অনুবাদ করে দেয়া হল--

জিয়া খান : সদ্য আত্মহত্যা করা জিয়া খান মূলত বয়ফ্রেন্ড সুরোজ পাঞ্চোলীর দ্বারা নির্যাতিত হয়ে আত্মহত্যা করেছেন এমনটাই মনে করছে মুম্বাই পুলিশ। বয়ফ্রেন্ড এর নির্যাতনে অতীষ্ট হয়ে অ্যাবোরশন পর্যন্ত করতে বাধ্যহয়েছিলেন জিয়া খান।

ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন : সালমান ঐশ্বরিয়ার প্রেমের কাহিনি বলিউডের কে না জানে। আজও সবার মুখে মুখে তাদের প্রেম কাহিনী। ২০০২ সালে যখন তাদের প্রেম ভেঙ্গে যায় তখন একটি সাক্ষাৎকাওে ঐশ্বরিয়া বলেন, সালমান তাকে সবসময় শারিরীক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করত।

পূজা ভাট : এইতো কয়েক বছর আগের ঘটনা। বলিউডের অভিনেত্রী ও পরিচালক মহেশ ভাটের মেয়ে পূজা ভাট তার তৎকালীন বয়ফ্রেন্ড রনবীর শোরের নামে অভিযোগ করেন যে একদিন মধ্যরাতে রনবীর শোরে মদ্যপানরত অবস্থায় তার বাসায় এসে চিৎকার করে এবং শারিরীকভাবে নির্যাতন করে। এ জন্য তিনি সংবাদ সম্মেলন পর্যন্ত করেন। ত্রা পরে অবশ্য সম্পর্কটিকে আর পরিনত হতে দেননি বুদ্ধিমতি পূজা।

জিনাত আমান : বলিউডের এক সময়ের সাড়া জাগানো অভিনেত্রী জিনাত আমানের কথাই ধরা যাক,দু দু বার বিয়ে করেও তিনি সুখী হতে পারেননি বরং নির্যাতিত হয়েছেন। প্রথমবার টিপু সুলতানখ্যাত সঞ্জয় খানকে বিয়ে করেছিলেন কিন্তু সঞ্জয় তাকে শারিরীকভাবে নির্যাতন করে ফলে তার একটি চোখ আজীবনের মত ক্ষতিগ্রস্থ হয়। পরে বিয়ে করেন মাজহার খানকে কিন্তু সেখানেও শারিরীক নির্যাতনের শিকার হন তিনি। অবশেষে একাই ভালো আছেন জিনাত।

শ্বেতা তিওয়ারি : স্টার প্লাসের প্রেরণা খ্যাত শ্বেতা তিওয়ারি ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন রাজা চৌধুরীকে। কিন্তু রাজা মাঝরাতে মদ্যপ অবস্থায় বাসায় ঢুকে নাকি শ্বেতাকে শারিরিক নির্যাতন ও গালাগালি করতেন। ফলে ২০১২ সালে রাজাকে ডিভোর্স দেন কসৌটি খ্যাত শ্বেতা।

যুক্তা মূখী : নাগপুরের হোটের ব্যবসায়ী প্রিন্স তুলিকে বিয়ে করেছিলেন সাবেক মিস ওয়ার্ল্ড যুক্তা মুখী । কিন্তু ২০১২ সালে স্বামীকে ডিভোর্স দেয়া যুক্তা জানান শারিরীক নির্যাতন থেকে বাঁচতে তিনি এ সিদ্ধান্ত নেন।

লাকসাম কলেজ ডিগ্রী শিক্ষার্থীদের নবীন বরণ অনুষ্ঠান

নাইম মেহেদী : ১৬ জুন লাকসাম নওয়াব ফয়েজুন্নেছা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের উদ্যোগে ডিগ্রী শিক্ষার্থীদের নবীন বরণ অনুষ্ঠিত হয়। কলেজ শাখা ছাত্রলীগ নেতা মোঃ সাইফুল ইসলাম রাজুর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন লাকসাম উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া সুমন। বক্তব্যে তিনি  বলেন- ছাত্রলীগের মূলনীতি শিক্ষা, শান্তি, প্রগতি। আমাদের প্রানপ্রিয় নেতা মাননীয় জাতীয় সংসদ সদস্য ২০০৮ সালে নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে লাকসাম নওয়াব ফয়েজুন্নেছা সরকারি কলেজ ৬টি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু করেছেন। আগামীতে আবারও যদি নির্বাচিত হয় তাহলে আমাদের প্রিয় শিক্ষার্থী ভাই বোনেরা কষ্ট করে কুমিল্লা, ঢাকায় গিয়ে অর্নাস পড়তে হবে না। নবীণ বরণ বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন লাকসাম উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সাজেদুল ইসলাম সজল, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আবদুল লতিফ সেকু। অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী, সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন।

লাকসাম পৌরসভার ৩০ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা

 বিশেষ প্রতিনিধি: সোমবার লাকসাম পৌরসভার ২০১৩-১৪ অর্থ বছরের প্রায় ৩০ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। পৌর কার্যালয়ে মেয়র আলহাজ মফিজুর রহমান এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ বাজেট ঘোষণা করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, পৌর সচিব মোঃ আলাউদ্দিন, পৌর কাউন্সিলর বাহার উদ্দিন, ইসমাইল হোসেন, মোশাররফ হোসেন, খলিলুর রহমান, মুশফেকা রহমান 
, হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মোঃ আকতার হোসেন, নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জাকির হোসেন প্রমুখ।

এবারের বাজেটে সর্বমোট আয় ধরা হয়েছে ২৯ কোটি ৮৯ লাখ ৪৩ হাজার ১৪০ টাকা এবং ব্যয় ধরা হয়েছে ২৯ কোটি ১৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা। উদ্বৃত্ত ধরা হয়েছে ৭৪ লাখ ৮৩ হাজার ১৪০ টাকা। বাজেটে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৮ কোটি ৮২ লাখ ৯৪ হাজার ৭২০ টাকা, রাজস্ব ব্যয় ৮ কোটি ২৮ লাখ ৬০ হাজার এবং উদ্বৃত্ত রাজস্ব ধরা হয়েছে ৫৪ লাখ ৩৪ হাজার ৭২০ টাকা। সরকার ও অন্যান্য প্রকল্প খাতে উন্নয়ন আয় ধরা হয়েছে ২০ কোটি ২৮ লাখ ৪৮ হাজার ৪২০ টাকা এবং উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ২০ কোটি ১৩ লাখ টাকা। এবারের বাজেটে রাস্তাঘাট ও অবকাঠামো উন্নয়নে সর্বোচ্চ ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

নাঙ্গলকোটে ট্রেনে কাটা পড়ে যুবকের মৃত্যু

নাঙ্গলকোট প্রতিনিধি: কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে সোমবার ট্রেনে কাটা পড়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। জানা যায়, বাসরলংকা গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে নাজমুল হাসান (১৮) চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা আন্তঃনগর সূবর্না এক্সেপ্রেস হাসানপুর ষ্টেশন অতিক্রম করে সামনে আসলে রেল লাইনের উপর মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় ট্রেনে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়।

লাকসাম কলেজে শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করেছে ছাত্রলীগ

  • আমাদের লাকসাম :একাদশ শ্রেণীতে অবৈধ ভর্তি বানিজ্যের সুযোগ না পেয়ে সোমবার ছাত্রলীগ কর্মীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে লাকসামের নওয়াব ফয়েজুন্নেসা সরকারি কলেজের প্রশাসনিক ভবনের প্রধান ফটক ও ভর্তি নিয়ন্ত্রন কক্ষে তালা লাগিয়ে দিয়ে অধ্যক্ষসহ অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারিদের অবরুদ্ধ করেছে।


কলেজ সূত্রে জানা যায়, ওইদিন সকাল ১০টায় একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়। ভর্তিইচ্ছু শিক্ষার্থীরা যথারীতি কাগজপত্র জমা দিয়ে ভর্তি ফরম সংগ্রহের জন্য ভর্তি নিয়ন্ত্রন কক্ষে যায়। এ সময় হঠাৎ কতিপয় ছাত্রলীগ কর্মী এসে হট্রোগোল শুরু করে ভর্তিইচ্ছু শিক্ষার্থীদের বের করে দেয়। তারা ভর্তি কমিটিসহ অন্যান্য কর্মচারিদের ভর্তি কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করে।

একপর্যায়ে ছাত্রলীগ কর্মীরা কলেজের প্রশাসনিক ভবনের প্রধান ফটকে ও  ভর্তি নিয়ন্ত্রন কক্ষে তালা লাগিয়ে দিয়ে অধ্যক্ষসহ অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারিদের অবরুদ্ধ করে রাখে। এতে ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ থাকে। কলেজের অধ্যক্ষ ঘটনাটি স্থানীয় সাংসদ এবং লাকসাম থানা পুলিশকে জানায়। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে প্রায় সোয়া এক ঘন্টা পর ১১.২০ মিনিটের সময় ছাত্রলীগ কর্মীরা তালা খুলে দিলে ভর্তি কার্যক্রম পুনঃরায় শুরু হয়।

ভর্তি কমিটির আহবায়ক সহযোগী অধ্যাপক মো. কামরুজ্জামান কুমিল্লার বার্তা ডটকমকে জানান, শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী চলতি শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণীতে জিপিএ’র ভিত্তিতে মেধা ক্রমানূসারে বিজ্ঞান বিভাগে ১৫০, মানবিক বিভাগে ৩০০ এবং ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ৪৫০জন মোট ৯০০ শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে।

নিয়মানুযায়ী শিক্ষার্থীরা অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করে। সে মোতাবেক কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড থেকে  মেধা ও অপেক্ষমান শিক্ষার্থীদের একটি তালিকা কলেজে পাঠানো হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ ওই তালিকা নোটিশ বোর্ডে সাঁটিয়ে দিলে কে বা করা এটি ছিঁড়ে নিয়ে যায়। এতে বিপাকে পড়েন ভর্তিইচ্ছু শিক্ষার্থীরা।

কলেজের অধ্যক্ষ ধীরেশ রঞ্জন ভৌমিক জানান, ছাত্রলীগ নামধারী শিহাব, রাজু ও কাজল নামে তিন যুবক এসে অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে একাদশ শ্রেণীতে শিক্ষার্থী ভর্তির ব্যাপারে তাঁদের কোটা প্রদানের দাবি করে। ছাত্রলীগ নামধারীদের অনৈতিক  আবেদনে সাড়া না দেওয়ায় তাঁদের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫জন বহিরাগত যুবক প্রশাসনিক ভবনের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে শিক্ষক-কর্মচারিদের অবরুদ্ধ করে রাখে। তিনি বিষয়টি স্থানীয় সাংসদকে অবহিত করেছেন বলেও জানান।

কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শিহাব খান এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কলেজের কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থী এই ঘটনা ঘটিয়েছে। এতে ছাত্রলীগের কোন সম্পৃক্ততা নেই।

লাকসাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল খায়ের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ভর্তি কার্যক্রম চলাকালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রতিদিন কলেজে পুলিশ মোতায়েন থাকবে।

এই ব্যাপারে সাংসদ মো. তাজুল ইসলাম কুমিল্লার বার্তা ডটকমকে বলেন, সরকারের নিয়মানুযায়ী ভর্তি কার্যক্রম চলবে। এতে কেউ হস্তক্ষেপ করলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


সোমবার, ১৭ জুন, ২০১৩

লাকসাম পৌরসভার প্রান হাউজিং ময়লা আবজনা ভরা ইসথুপ।

লাকসাম হাউজিংয়ে ডাসটবিন না থাকার কারনে ।সব বাসা বাড়ী থেকে ময়লা আবজনা ফেলা হয়।ফলে এখান থেকে চারদিকে দুরগনধ ছড়িয়ে পড়ে।এই ময়লা আবজনা থেকে মশা মাচির উপাদ্র বাড়ে ।তাই হাউজিংয়ের সব মানুষের লাকসাম পৌরভার মেয়রের কাছে একটাই দাবী এখানে একটি ডাসটবিন তৈরি করা হোক।সবার দৃসিট আকষন করছি।

নম্বর না বদলেই অপারেটর বদল


আইটি ডেস্ক: নম্বর না বদলেই অপারেটর বদলের সুযোগ দিতে মোবাইল ফোন অপারেটরদের নির্দেশ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। বৃহস্পতিবার বিটিআরসি এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করে। মোবাইল ফোন অপারেটরদের মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি বা এমএনপি সুবিধা বাস্তবায়ন করতেই এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

নির্দেশনায় বলা হয়, এমএনপি সুবিধা দিতে অপারেটরা গ্রাহকদের কাছ থেকে ৫০ টাকার বেশি নিতে পারবে না। আগামী সাত মাসের মধ্যেই গ্রাহকদের এই সুবিধা দিতে হবে। আর এ নির্দেশনা জারির তিন মাসের মধ্যে অপারেটরদের এমএনপি সেবা শুরু করার জন্য একটি কনসোরিটয়াম গঠন করতেও বলা হয়েছে। বিটিআরসির একজন কমিশনার এই কনসোর্টিয়ামের বোর্ড মেম্বার থাকবেন।



বিটিআরসি বলছে, এমএনপির জন্য আবেদনের তিন দিনের মধ্যে অপারেটরদেরে এ সেবা দিতে হবে এবং কেউ যদি একবার নম্বর বদল করে আবারো অন্য নম্বরে ফেরত যেতে চায় তাহলে ৪৫ দিন অপেক্ষা করতে হবে। প্রি-পেইড ও পোস্ট পেইড উভর ধরনের  গ্রাহকই এমএনপি সুবিধা পাবে।

নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির হিসাবে গত এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশে ছয়টি অপারেটরের মোট গ্রাহকের সংখ্যা ১০ কোটি ১২ লাখের বেশি।

দীর্ঘ দিন ব্যবহারের ফলে মোবাইল নম্বর একজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পরিচয় রূপে পরিণত হয়। আবার বিভিন্ন অফার আর ভাল নেটওয়ার্ক এবং সুলভ মূল্যে টেলিযোগাযোগ সেবা পেতে প্রায়ই গ্রাহকদের এক অপারেটরকে বাদ দিয়ে অন্য অপারেটররের সংযোগ নিতে হয়।

বর্তমানে ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন দেশ ছাড়াও প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানে মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি পরিসেবা চালু রয়েছে।

 যাকারিয়া ইবনে ইউসুফ: আশরাফুল বাংলাদেশের প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের মধ্যে অন্যতম একজন। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাস লিখতে গেলে তাকে বাদ দেয়ার সাধ্য কারো নেই। বাংলাদেশের ক্রিকেটে তার আগমন রাজপুত্রের মতো। বাংলাদেশ ক্রিকেটের শিশু বয়সে আশরাফুল এসেছেন, খেলেছেন আর জয় করে নিয়েছেন এদেশের লাখো-কোটি ক্রিকেট ভক্তের হৃদয়। তার ব্যাটেই নিশ্চিন্তে হাসতে শুরু করে বাংলাদেশ, দায়িত্বশীলতার সাথে খেলে তিনি হয়েছিলেন বাংলাদেশের আশার ফুল। যাকে নিয়ে প্রতিনিয়তই দানা বাঁধতে থাকে তারুন্যের স্বপ্নেরা। তিনি তার প্রতিদানও দিয়েছেন সাকিব-মুশফিক পূর্ববর্তি সময়ে বাংলাদেশের প্রতিটি ম্যাচ জয়ের পেছনে অবদান রেখে। আশরাফুলের অবদান এমনই। তারুণ্যকে পথ দেখাবার চওড়া বুকের পাটা তার ছিল এবং আবারো তা প্রমাণ হলো। তিনি ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে যাওয়ার কথা অকপটে স্বীকার করে নিয়েছেন। চওড়া বুকের পাটা না হলে এভাবে দোষ স্বীকার করার রেওয়াজ এ দেশের আর একটি আছে কীনা মাইক্রোস্কোপ দিয়ে খুঁজতে হবে।

যারা এ পর্যন্ত পড়ে আমার চৌদ্দ গোষ্ঠি উদ্ধারের মনস্থির করেছেন, তাদের বলছি, আশরাফুল ম্যাচ পাতিয়ে/স্পট ফিক্সিং করে যে অন্যায় করেছেন সেটার দায় শুধু তারই। তার এই অপকর্মের জন্য আর কারো কোনো ক্ষতি হয়নি। যে দেশে শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারির মাধ্যমে ৩৩ লাখ বিনিয়োগকারীকে পথে বসানো হয় সরকারি যোগসাজশে, পদ্মা সেতুর মতো সুবিশাল প্রকল্পে দুর্নীতির প্লট তৈরি হয়, হলমার্ক কেলেঙ্কারির মতো বাঙলার আকাশ ঢেকে দেওয়া কলঙ্ক হয়, বিরোধী দলের টানা সংসদ বর্জন চলে,  রামুতে বৌদ্ধদের ওপর হামলা চলে, র‌্যাবের বিচার বহির্ভূত হত্যা, দিনের পর দিন হরতাল, বিদেশে টাকা পাচার করে দেশের বারোটা বাজানো হয়, রানা প্লাজা ধ্বসের মতো ঘটনায় ব্যক্তি মানুষকে দায়ী করা হয়-সরকার যন্ত্র হিসেবের বাইরে রয়ে যায়, সেখানে আশরাফুল অনণ্য উদাহরন স্থাপন করেছেন নিজের দোষ স্বীকার করে। বুক ফুলিয়ে এই তারুন্যের জন্য আবারো গর্ববোধ করছি। আবারো এই তারুন্যের জন্য প্রাণ খুলে বলছি, সাবাশ আশরাফুল! সাবাশ। ভুল হতেই পারে, সেই ভুল দ্রুততায় স্বীকার করে অন্যদের জন্য আপনিই উদাহরন স্থাপন করলেন। সাবাশ। যারা পত্রিকার পাতা, টেলিভিশন টকশোয় গলা ফাটাচ্ছে আপনাকে নিয়ে তাদের মুখে জুতা মেরেছেন আপনি। তারুন্যকে এ দেশে কেউ দমায়ে রাখতে পারবে না। এগিয়ে যান আশরাফুল। আছি কোটি তারুন্য আপনাদের পাশে। ক্রিকেট বাংলাদেশের পাশে।

বাংলাদেশের ক্রিকেটের আকাশটা যখন একটু বিস্তৃত হতে শুরু করলো তখনই আশরাফুলের সাথে যোগ হন সাকিব, তামিম, মুশফিক, নাসিররা। আর ঠিক তখনই যেন কালো মেঘ হয়ে নেমে আসে স্পট ফিক্সিংয়ের ভয়াল থাবা। ধ্বংস করে দিতে চায় এদেশের লাখো মানুষের স্বপ্ন, আশা আকাঙ্খার প্রতীক হয়ে ওঠা ক্রিকেটার, লিটল মাস্টার খ্যাত আশরাফুলকে। তার বিরদ্ধে ওঠে বিপিএলে ম্যাচ পাতানোর অভিযোগ। আর তার স্বীকারোক্তির মাধ্যমে ঘটে যায় আমাদের আশার ফুলের অপমৃত্যু। বেদনায় নীল হয়ে যায় পুরো দেশ। আমরা সবাই জানি, ফিক্সিংয়ে তৃতীয় পক্ষের বাড়াবাড়ি রকমের হস্তক্ষেপ থাকে। কোথাও কোথাও আন্ডারওয়ার্ল্ডের চোখ রাঙানিও থাকে। পাপের টাকা হাতে নিতে হবে নইলে জীবন যাবে। এ রকম নানা চাপ খেলোয়াড়দের ওপর হামেশাই থাকে। এসব চাপ সামাল দেয়া অনেকের পক্ষেই সম্ভব হয় না। সেই কারণে পথচ্যূত হয়ে পড়েন তারকা খেলোয়াড়রা।

ক্রিকেটের বাণিজ্যিকীকরণ হয়েছে অনেক আগেই, ক্রিকেট মানেই এখন টাকার খেলা আর রঙ-বেরঙের গাড়ি-বাড়ির হাতছানি। ক্রিকেটের পরতে পরতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে কাঁচা টাকার গন্ধ। টাকা-ই ক্রিকেটারদের বিপথগামী করছে-এমন অভিযোগও পুরনো। টাকার কাছে বিক্রি হয়েই তারা বিক্রি করছেন কোটি মানুষের স্বপ্নকে। দ্বিধাবিভক্ত, হানাহানি, হিংসা-দ্বেষ ভুলে পুরো জাতিকে একমাত্র ক্রিকেটটাই পারে একই সূতোয় গাঁথতে। লাল-সবুজের পতাকা হাতে কিংবা অঙ্গে পতাকা জড়িয়ে, দেশপ্রেমে বলীয়ান হয়ে বাংলাদেশ-বাংলাদেশ বলে উল্লাস করতে সাহায্য করেন আবার সেই আশরাফুলরাই। আশরাফুলদের সাফল্যেই রাত-বিরাতে রাস্তায় নামে মানুষের ঢল, সব ক্ষোভ ভালবাসা হয়ে ঝড়ে পরে লাখো মানুষের কন্ঠে। আশরাফুলদের ব্যর্থতাই আবার আমাদের কাঁদায়। বিশাল প্রাপ্তি কি এই ‘সামাণ্য পাপে’ ধূলিস্যাত হয়ে যাবে? না, তা হতে পারে না।

বেশ ভালই চলছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট। এরপর হঠাৎ টি-২০ জ্বরে প্বার্শবর্তী দেশ ভারতের প্ররোচনায় দেশে শুরু হলো বিপিএল। দেশে ভীড়তে শুরু করে পাশ্ববর্তী দেশের জুয়াড়িরা। তখনই কেন এ ব্যাপারে কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়া হলো না? এই প্রশ্ন অনেকের মনেই ঘুরপাক খাচ্ছে। যাই হোক বিপিএলে দেশ-বিদেশের বিখ্যাত ক্রিকেটারদের সাথে খেলতে নামল দামাল ছেলেরা। বিপিএলের লক্ষ্য উদ্দেশ্য হিসেবে বলা হলো বিদেশি ভালো খেলোয়াড়দের সাথে খেললে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের টেম্পারামেন্ট বাড়বে সেই সাথে খেলোয়াড়দের পকেটে কিছু টাকা ঢুকলে মন্দ কী। কথাটা মিথ্যা নয় বিপিএলের কল্যাণেই এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলে বাংলাদেশ। ঘটনাটা এখানে থেমে থাকলেই ভালো হতো। তবে ক্রিড়াঙ্গনে গুঞ্জন ওঠে বিপিএলের অনেক তারকা খেলোয়াড়ের প্রতিশ্রুত পূর্ণাঙ্গ টাকা পরিশোধ করেনি কর্তৃপক্ষ। তবে কি লেনদেনে এই অস্বচ্ছতাই ক্রিকেটারদের বিপথগামী করে তোলে? তাহলে আশরাফুলদের পাশাপাশি কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে তাদেরকেও যারা ব্যার্থ হয়েছেন তাদের প্রতিশ্রুত অর্থ জোগাতে। তারপরও আশরাফুল পুরো জাতির সাথে প্রতারণার দায় কোনভাবেই এড়াতে পারেন না। সেটা তিনি অকপটে স্বীকারও করে নিয়েছেন।

আমি নিশ্চিতভাবে জানি, আশরাফুল তার কোটি ভক্তের কথা ভেবেই ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন, কাতর চিত্তে জাতির কাছে চেয়েছেন নি:শর্ত ক্ষমা। জাতি হয়তো তাদের এই বাঘা ব্যাটসম্যানটিকে ক্ষমা করবে, কিন্তু ক্রিকেট বোর্ড হয়তো তাকে ক্ষমা করবে না। ব্যাট হাতে আর দেখা যাবে না প্রিয় আশরাফুলকে। সংবাদ সম্মেলনে যে আশরাফুলের অশ্রুসিক্ত ছবি আমরা দেখেছি, তা দেখে কোটি তারুন্যের সাথে আমারও বুকটা ভেঙে গেছে। আমরাতো এমন অপরাধী মুখের অশ্রুসিক্ত ছবি দেখতে চাইনি। আমরা চাই ম্যান অব দ্য ম্যাচ বা ম্যান অব সিরিজ জয়ী আশরাফুলের হাস্যোজ্বল ছবি।

হয়তো বা এমন হাস্যোজ্বল ছবি আর পাবো না আমরা। তবে কলঙ্কের কালো মেঘ সরিয়ে দিতে আশরাফুল যে নজীরটি স্থাপন করলেন তার জন্যও উদাহরন হয়ে থাকবেন তিনি। হাজারো বাংলাদেশীর আশার ফুল আশারাফুলকে স্যালুট এজন্যই যে তিনি নিজের দোষ স্বীকার করার মতো দুঃসাহস দেখালেন। সাংবাদিকদের ডেকে বলতে পারলেন আমি অপরাধী, কর্তৃপক্ষের সব ধরণের শাস্তির জন্য আমি প্রস্তুত আছি। কিন্তু যারা প্রতিনিয়তই আমাদের সাথে প্রতারণা করে চলেছেন, যাদের জন্য পদ্মা সেতু হয় না, যাদের দুর্ণীতির কারণে শেয়ারবাজারে নামে ধস, দুর্ণীতিতে বাংলাদেশ বছরের পর বছর চ্যাম্পিয়ান হয় তারাতো একটি বারের জন্যও জনতার সামনে এসে ক্ষমা চায় না। তারা জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসে আর লুটপাট করে। তারা আজ নিশ্চয়ই আশরাফুলের এমন নিষ্পাপ কান্না দেখে ড্রইংরুমে বসে দাত কেলিয়ে হাসছেন আর চ্যানেল পাল্টে খবর গিলছেন। অথচ একটি বারের জন্যও তারা ভাবছেন না যে তারা নিজেরই প্রতিচ্ছবি দেখছেন ওই টিভিতে। কারণ বোঝার মতো মানসিক ক্ষমতা আসলে তাদের নেই। ধন্যবাদ আশরাফুল, আপনি ক্ষমা চাওয়ার যে নজির স্থাপন করলেন তাতে পুরো জাতি আপনাকে ক্ষমা করে দেবে। না দিলে দাত কেলানো লোকদের কাছে জিম্মি হবে গোটা দেশ। অন্ধকারের পথ টাইগারদের নয়, শত বিপদে প্রতিকূলতায় তাই টাইগারদের পাশে আছি, থাকব। ক্রিকেট বাংলাদেশ তার জয়রথ থামাবে না। অন্ধকার ভেদ করে জয়ের আলো আসবেই।



লাকসামে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ!